ধানে আক্রমনকারী ক্ষতিকর পোকার লক্ষণ, সাবধানতা, ব্যবস্থাপনা ও করনীয়
ধান (বৈজ্ঞানিক নাম: Oryza sativa ওরিজা সাতিভা) পোয়াসি গোত্রের
দানাশস্য জাতীয় উদ্ভিদ। ধান উষ্ণ জলবায়ুতে, বিশেষত পূর্ব-এশিয়ায় ব্যাপকভাবে চাষ হয়। ধান বা ধান্য শব্দের উৎপত্তি অজ্ঞাত। ধানবীজ বা চাল সুপ্রাচীনকাল থেকে লক্ষ কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য। চীন ও জাপানের রাজাদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রায় ১০,০০০ বছর আগে ধান চাষ শুরু হয়েছিল বলে জানা যায়। ব্যাপক অভিযোজন ক্ষমতার দরুন ধান উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, এমনকি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২,৬০০ মিটার উচ্চতায়ও (জুমলা, নেপাল) জন্মায়।
পোকার নামঃ ধানের মাজরা পোকা
![]() |
মাজরা পোকার মথ |
লক্ষণঃ
মাজরা পোকার কীড়াগুলো কাণ্ডের ভেতরে থেকে খাওয়া শুরু করে এবং ধীরে ধীরে গাছের ডিগ পাতার গোড়া খেয়ে কেটে ফেলে। ফলে ডিগ পাতা মারা যায়। একে ‘মরা ডিগ’ বা ‘ডেডহার্ট ’ বলে। ক্ষতিগ্রস্ত গাছের কাণ্ডে মাজরা পোকা খাওয়ার দরুণ ছিদ্র এবং খাওয়ার জায়গায় পোকার মল দেখতে পাওয়া যায়। মাজরা পোকার কীড়াগুলো ডিম থেকে ফুটে বেরুবার পর আস্তে আস্তে কান্ডের ভেতরে প্রবেশ করে। কীড়ার প্রথমাবস্থায় এক একটি ধানের গুছির মধ্যে অনেকগুলো করে গোলাপী ও কালোমাথা মাজরার কীড়া জড়ো হতে দেখা যায়। কিন্তু হলুদ মাজরা পোকার কীড়া ও পুত্তলীগুলো কাণ্ডের মধ্যে যে কোন জায়গায় পাওয়া যেতে পারে। আলোর চার পাশে যদি প্রচুর মাজরা পোকার মথ দেখতে পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে ক্ষেতের মধ্যে মথগুলো ডিম পাড়া শুরু করেছে।
ব্যবস্থাপনাঃ
মাজরা পোকার কীড়াগুলো কাণ্ডের ভেতরে থেকে খাওয়া শুরু করে এবং ধীরে ধীরে গাছের ডিগ পাতার গোড়া খেয়ে কেটে ফেলে। ফলে ডিগ পাতা মারা যায়। একে ‘মরা ডিগ’ বা ‘ডেডহার্ট ’ বলে। ক্ষতিগ্রস্ত গাছের কাণ্ডে মাজরা পোকা খাওয়ার দরুণ ছিদ্র এবং খাওয়ার জায়গায় পোকার মল দেখতে পাওয়া যায়। মাজরা পোকার কীড়াগুলো ডিম থেকে ফুটে রেরুবার পর আস্তে আস্তে কান্ডের ভেতরে প্রবেশ করে। কীড়ার প্রথমাবস্থায় এক একটি ধানের গুছির মধ্যে অনেকগুলো করে গোলাপী ও কালোমাথা মাজরার কীড়া জড়ো হতে দেখা যায়। কিন্তু হলুদ মাজরা পোকার কীড়া ও পুত্তলীগুলো কাণ্ডের মধ্যে যে কোন জায়গায় পাওয়া যেতে পারে। আলোর চার পাশে যদি প্রচুর মাজরা পোকার মথ দেখতে পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে ক্ষেতের মধ্যে মথগুলো ডিম পাড়া শুরু করেছে।
সাবধানতাঃ
১। জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া সার বা এলোপাথারি বালাইনাশক ব্যবহার করবেন না।
করনীয়ঃ
১। সঠিক দূরত্বে ও সঠিক বয়সের চারা রোপন করুন ।
২। চারা লাগানোর পরপরই জমিতে পর্যাপ্ত পরিমানে খুঁটি পুতে দিন যাতে সেখানে পাখি বসে পোকা খেতে পারে। ৩। মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার দিন।
পোকার নামঃ মাজরা পোকা
![]() |
মাজরা পোকার আক্রমনকৃত ফসলী জমি |
লক্ষণঃ
Delete করতে হবে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ বন্ধ করা ।
২। সারি করে ধান লাগ।
৩। পারচিং করা।
সাবধানতাঃ
১। মাটি শোধন ।
২। বীজ শোধন ।
৩। মাত্রাতিরিক্ত
সেচ পরিহার করা ।
করনীয়ঃ
রোগ প্রতিরোধী জাতের চাষ ।
পোকার নামঃ মাজরা পোকা
![]() |
মাজরা পোকার আক্রমনকৃত ফসলী জমি |
লক্ষণঃ
১। মাজরা পোকার কীড়াগুলো কাণ্ডের ভেতরে থেকে খাওয়া শুরু করে এবং ধীরে ধীরে গাছের ডিগ পাতার গোড়া খেয়ে কেটে ফেলে। ফলে ডিগ পাতা মারা যায়। একে ‘মরা ডিগ’ বা ‘ডেডহার্ট ’ বলে।
২। ক্ষতিগ্রস্ত গাছের কাণ্ডে মাজরা পোকা খাওয়ার দরুণ ছিদ্র এবং খাওয়ার জায়গায় পোকার মল দেখতে পাওয়া যায়।
৩। মাজরা পোকার কীড়াগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হবার পর আস্তে আস্তে কাণ্ডের ভেতরে প্রবেশ করে।
৪। কীড়ার প্রথমাবস্থায় এক একটি ধানের গুছির মধ্যে অনেকগুলো করে গোলাপী ও কালোমাথা মাজরার কীড়া জড়ো হতে দেখা যায়। কিন্তু হলুদ মাজরা পোকার কীড়া ও পুত্তলীগুলো কাণ্ডের মধ্যে যে কোন জায়গায় পাওয়া যেতে পারে।
৫। আলোর চার পাশে যদি প্রচুর মাজরা পোকার মথ দেখতে পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে ক্ষেতের মধ্যে মথগুলো ডিম পাড়া শুরু করেছে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। নিয়মিতভাবে ক্ষেত পর্যবেক্ষণের সময় মাজরা পোকার মথ ও ডিম সংগ্রহ করে নষ্ট করে ফেললে মাজরা পোকার সংখ্যা ও ক্ষতি অনেক কমে যায়। থোর আসার পূর্ব পর্যন্ত হাতজাল দিয়ে মথ ধরে ধ্বংস করা যায়।
২। ক্ষেতের মধ্যে ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখির বসার সুযোগ করে দিলে এরা পূর্ণবয়স্ক মথ খেয়ে এদের সংখ্যা কমিয়ে ফেলে।
৩। মাজরা পোকার পূর্ণ বয়স্ক মথের প্রাদুর্ভাব যখন বেড়ে যায় তখন ধান ক্ষেত থেকে ২০০-৩০০ মিটার দূরে আলোক ফাঁদ বসিয়ে মাজরা পোকার মথ সংগ্রহ করে মেরে ফেলা যায়।
৪। ধানের জমিতে ১০০ টির মধ্যে ১০-১৫ টি মরা কুশি অথবা ৫ টি মরা শীষ পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন: ভিরতাকো ৪০ ডব্লিউজি ৭৫ গ্রাম/হেক্টর হারে অথবা কার্বোফুরান গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ফুরাডান ৫ জি ১০ কেজি/হেক্টর হারে বা ব্রিফার ৫জি ১০ কেজি/হেক্টর হারে অথবা ডায়াজিনন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সার্বিয়ন ৬০ ইসি ৩.৪ মিলি./ লি: অথবা ফিপ্রোনিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: গুলী ১মিলি/লি: হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা বা রিজেন্ট ৩ জিআর ১০ কেজি/হেক্টর হারে প্রয়োগ করা। অথবা অন্য নামের অনুমোদিত কীটনাশক অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করা । দানাদার কীটনাশক প্রয়োগের সময় জমিতে অবশ্যই পানি থাকা চাই ।
সাবধানতাঃ
১. জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া সার বা এলোপাথারি বালাইনাশক ব্যবহার করবেন না।
করনীয়ঃ
১. সঠিক দূরত্বে ও সঠিক বয়সের চারা রোপণ করুন ।
২.চারা লাগানোর পরপরই জমিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে খুঁটি পুতে দিন যাতে সেখানে পাখি বসে পোকা খেতে পারে। ৩. মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার দিন।
পোকার নামঃ ধানের পাতা মোড়ানো পোকা

পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণকৃত ফসল
![]() |
পাতা মোড়ানো পোকার আক্রমণকৃত ফসল |
লক্ষণঃ
এরা পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে পাতার সবুজ অংশ খেয়ে ফেলে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত পাতায় সাদা লম্বা দাগ দেখা যায়। খুব বেশি ক্ষতি করলে পাতাগুলো পুড়ে পাওযার মত দেখায়। পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী পোকা পাতার মধ্য শিরার কাছে ডিম পাড়ে। কীড়াগুলো পাতার সবুজ অংশ খায় এবং বড় হবার সাথে সাথে তারা পাতা লম্বালম্বিভাবে মুড়িয়ে একটা নলের মত করে ফেলে। মোড়ানো পাতার মধ্যেই কীড়াগুলো পুত্তলীতে পরিণত হয়।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। প্রাথমিক অবস্থায় পোকার ডিম বা কীড়াসহ পাতা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
২। আলোক ফাঁদের সাহায্যে পূর্ণবয়স্ক মথ ধরে মেরে ফেলা।
৩। জমিতে ডালপালা পুঁতে পোকাখেকো পাখির সাহায্যে পূর্ণ বয়স্ক মথ দমন করা।
৪। শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা যেমন: ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডারসবান ২০ ইসি বা পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি ২মি.লি./ লি. বা ম্যালাথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ফাইফানন ২.৪ মি.লি./ লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা। অথবা অন্য নামে এ পোকার জন্য অনুমোদিত বালাইনাশক অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করা
সাবধানতাঃ
১। জমিতে অতিরিক্ত ইউরিয়া সার বা এলোপাথারি বালাইনাশক ব্যবহার করবেন না।
করনীয়ঃ
১। সঠিক দূরত্বে ও সঠিক বয়সের চারা রোপন করুন ।
২। চারা লাগানোর পরপরই জমিতে পর্যাপ্ত পরিমানে খুঁটি পুতে দিন যাতে সেখানে পাখি বসে পোকা খেতে পারে। ৩। মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার দিন।
পোকার নামঃ ধানের বাদামী গাছফড়িং

ধানের বাগামী গাছ ফড়িং
![]() |
ধানের বাগামী গাছ ফড়িং |
লক্ষণঃ
এটি কারেন্ট পোকা নামেও পরিচিত। এটি ধানের অতি ক্ষতিকর একটি পোকা। এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে, ফলে এ পোকার সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত হপারবার্ণ - এর সৃষ্টি হয়। আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলদে হয় এবং পরে শুকিয়ে মারা যায়। লম্বা পাখাবিশিষ্ট পূর্ণ বয়স্ক বাদামী ফড়িংগুলো প্রথমে ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে। এরা পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা (নিম্ফ) বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায় এবং পূর্ণ বয়স্ক ফড়িং এ পরিণত হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয়। প্রথম পর্যায়ের (ইনস্টার) বাচ্চাগুলোর রং সাদা এবং পরের পর্যায়ের বাচ্চাগুলো বাদামী। বাচ্চা থেকে পূর্ণ বয়স্ক বাদামী গাছফড়িং ছোট পাখা এবং লম্বা পাখা বিশিষ্ট হতে পারে। ধানে শীষ আসার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশি থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো সাধারণত: গাছের গোড়ার দিকে বেশি থাকে। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে, যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। আক্রান্ত জমিতে বিলি কেটে আলো চলাচলের ব্যবস্থা করা ।
২। জমিতে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা।
৩। উর্বর জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ পরিহার করা ।
৪। বাদামী গাছফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত যেমন: ব্রি ধান৩৫ চাষ করা।
৫। ক্ষেতে শতকরা ৫০ ভাগ গাছে অন্ততঃ একটি মাকড়সা থাকলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা। ৬। শতকরা ৫০ ভাগ ধান গাছে ২-৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা। যেমন: আইসোপ্রোকার্ব গ্রুপের কীটনাশক যেমন: মিপসিন বা সপসিন ২.৬ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা । ( ১০ লিটার পানিতে ২৬ গ্রাম মিপসিন বা সপসিন মেশালে ৫ শতাংশ জমি স্প্রে করা যাবে।) অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ইমিটাফ ১২৫ মিলি/ হেক্টর (০.২৫ মিলি/ লি) হারে বা ইমপেল (০.৫ মিলি/ লি) হারে অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ক্লাসিক ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছের গোঁড়ায় স্প্রে করা ৬। অবশ্যই ক্ষেতে বিলি কেটে গাছের গোঁড়ায় স্প্রে করতে হবে।
সাবধানতাঃ
১। বিলম্বে চারা রোপন করবেন না
করনীয়ঃ
১। যে সব এলাকায় সব সময় বাদামী গাছফড়িং এর উপদ্রব হয় সে সব এলাকায় তাড়াতাড়ি পাকে (যেমন: বিনাধান-৭ বা ব্রি ধান৩৩ ) এমন জাতের ধান চাষ করুন ।
২। চারা থেকে চারা ৩০ সে.মি ও লাইন থেকে লাইন ৪০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগান।
৩। জমিতে সুষম পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহারের জন্য এনপিকে গুটি প্রয়োগ করুন ।
৪। ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।
পোকার নামঃ বাদামি ঘাস ফড়িং
![]() |
ধানের বাগামী গাছ ফড়িং পোকার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
১। কারেন্ট পোকা নামেও পরিচিত।
২। ধানের অতি ক্ষতিকর একটি পোকা। এরা খুব তাড়াতাড়ি বংশ বৃদ্ধি করে, ফলে এ পোকার সংখ্যা এত বেড়ে যায় যে, আক্রান্ত ক্ষেতে বাজ পড়ার মত হপারবার্ণ - এর সৃষ্টি হয়।
৩। আক্রান্ত গাছগুলো প্রথমে হলদে হয় এবং পরে শুকিয়ে মারা যায়।
৪। লম্বা পাখাবিশিষ্ট পূর্ণবয়স্ক বাদামী ফড়িংগুলো প্রথমে ধান ক্ষেতে আক্রমণ করে।
৫। পাতার খোলে এবং পাতার মধ্য শিরায় ডিম পাড়ে।
৬। ডিম ফুটে বাচ্চা (নিম্ফ) বের হতে ৭-৯ দিন সময় লাগে।
৭। বাচ্চাগুলো ৫ বার খোলস বদলায় এবং পূর্ণবয়স্ক ফড়িং এ পরিণত হতে ১৩-১৫ দিন সময় নেয়।
৮। প্রথম পর্যায়ের (ইনস্টার) বাচ্চাগুলোর রং সাদা এবং পরের পর্যায়ের বাচ্চাগুলো বাদামী। বাচ্চা থেকে পূর্ণবয়স্ক বাদামী গাছফড়িং ছোট পাখা এবং লম্বা পাখা বিশিষ্ট হতে পারে।
৯। ধানে শীষ আসার সময় ছোট পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাই বেশী থাকে এবং স্ত্রী পোকাগুলো সাধারণত: গাছের গোড়ার দিকে বেশি থাকে।
১০। গাছের বয়স বাড়ার সাথে সাথে লম্বা পাখা বিশিষ্ট ফড়িং এর সংখ্যাও বাড়তে থাকে, যারা এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় উড়ে যেতে পারে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। আক্রান্ত জমিতে বিলি কেটে আলো চলাচলের ব্যবস্থা করা ।
২। জমিতে জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা।
৩। উর্বর জমিতে ইউরিয়া সারের উপরি প্রয়োগ পরিহার করা ।
৪। বাদামী গাছফড়িং প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন জাত যেমন: ব্রি ধান-৩৫ চাষ করা।
৫। ক্ষেতে শতকরা ৫০ ভাগ গাছে অন্ততঃ একটি মাকড়সা থাকলে কীটনাশক প্রয়োগ না করা।
৬। শতকরা ৫০ ভাগ ধান গাছে ২-৪টি ডিমওয়ালা স্ত্রী পোকা অথবা ১০টি বাচ্চা পোকা প্রতি গোছায় পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা। যেমন: আইসোপ্রোকার্ব গ্রুপের কীটনাশক যেমন: মিপসিন বা সপসিন ২.৬ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা। ( ১০ লিটার পানিতে ২৬ গ্রাম মিপসিন বা সপসিন মেশালে ৫ শতাংশ জমি স্প্রে করা যাবে।) অথবা ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ইমিটাফ ১২৫ মিলি/ হেক্টর (০.২৫ মিলি/ লি) হারে বা ইমপেল (০.৫ মিলি/ লি) হারে অথবা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ক্লাসিক ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে গাছের গোড়ায় স্প্রে করা ৭। অবশ্যই ক্ষেতে বিলি কেটে গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে।
সাবধানতাঃ
১. বিলম্বে চারা রোপন করবেন না।
করনীয়ঃ
১. যে সব এলাকায় সব সময় বাদামী গাছফড়িং এর উপদ্রব হয় সে সব এলাকায় তাড়াতাড়ি পাকে ( যেমন: বিনা ধান-৭ বা ব্রি ধান৩৩ ) এমন জাতের ধান চাষ করুন ।
২. চারা থেকে চারা ৩০ সে.মি ও লাইন থেকে লাইন ৪০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে লাগান।
৩. জমিতে সুষম পরিমানে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহারের জন্য এনপিকে গুটি প্রয়োগ করুন ।
৪. ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আশে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।
পোকার নামঃ চুঙ্গী পোকা
![]() |
চুঙ্গী পোকার আক্রমন |
লক্ষণঃ
কীড়াগুলো রাতের বেলায় পাতার সবুজ ক্লোরোফিল অংশ লম্বালম্বি এমনভাবে কুড়েকুড়ে খায় যে শুধুমাত্র উপরের পর্দাটি বাকী থাকে। এরা পাতার উপরের অংশ কেটে আড়াই থেকে তিন সেন্টিমিটার লম্বা চুঙ্গী তৈরী করে এবং দিনের বেলায় এ সমস্ত চুঙ্গীর মধ্যে লুকিয়ে থাকে। পাতা কুড়ে কুড়ে খাওয়ার জন্য এবং পাতা কেটে চুঙ্গী বানাবার ফলে আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বা সাদা দাগ ও পাতার আগা কাটা দেখতে পাওয়া যায়। চুঙ্গীগুলো আক্রান্ত গাছের গায়ে ঝুলতে থাকে এবং ক্ষেতের পানিতে ভাসতে থাকে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। জমির পানি শুকিয়ে ফেলা কারণ চুঙ্গী পোকার ক্রীড়া পানি ছাড়া বাঁচতে পারেনা।
২। আলোর ফাঁদের সাহায্যে পূর্ণ বয়স্ক মথ ধরে মেরে ফেলা।
৩। কেরোসিন মিশ্রিত রশি টান দিয়ে চুঙ্গী মাটিতে ফেলে দেওয়া।
৪। ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেওয়া।
৫। শামুক, মাকড়সা ও বোলতা সংরক্ষণ করা।
৬। শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা।যেমন: ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডারসবান ২০ ইসি বা পাইক্লোরেক্স ২০ ইসি ২মি.লি./ লি. বা ম্যালাথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ফাইফানন ২.৪ মিলি/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা। অথবা অন্য নামে এ পোকার জন্য অনুমোদিত বালাইনাশক অনুমোদিত মাত্রায় প্রয়োগ করা
পোকার নামঃ পামরী পোকা
![]() |
পামরী পোকার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
ক্ষতিগ্রস্থ পাতায় শিরার সমান্তরালে লম্বালম্বি দাগ পড়ে। পূর্ণ বয়স্ক ও গ্রাব দুই অবস্থায় ধানের ক্ষতি করে। কীড়াগুলি পাতার দুই পর্দার মাঝে সুড়ঙ্গ করে সবুজ অংশ খাওয়ার ফলে পাতা শুকিয়ে যায়। বাড়ন্ত ধানের জমিতে আক্রমন বেশি হয়।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। আইল বা পার্শ্ববর্তী জায়গায় আগাছা পরিস্কার করা।
২। হাত জালের সাহায্যে বয়স্ক পোকা ধরে মাটিতে পুঁতে ফেলা।
৩। আক্রান্ত ক্ষেতের পাতা ৩- ৪ সে.মি. কেটে ধ্বংস করা।
৪। শতকরা ৩৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা। যেমন: ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের যেমন: ক্লাসিক বা পাইরিফস বা লিথাল ২ মিলি/ লি. হারে অথবা কারটাপ গ্রুপের যেমন: কাটাপ বা কারটাপ বা ফরওয়াটাপ কীটনাশক ১.৬ গ্রাম/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে বিকালে স্প্রে করা।
পোকার নামঃ ধানের পাতামাছি পোকা

পাতামাছির আক্রমণ
![]() |
পাতামাছির আক্রমণ |
লক্ষণঃ
ধানের কচি পাতা ভালভাবে খোলার আগেই এ পোকা পাতার পাশ থেকে খাওয়া শুরু করে তাই আক্রান্ত পাতার কিনারা স্বচ্ছ ও সাদা হয়ে যায় ।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। ক্ষেতের দাড়ানো পানি সরিয়ে দেয়া ।
২। অথবা মালচিং করে পানি ঘোলা করে দেয়া।
পোকার নামঃ ধানের গলমাছি

গলমাছির আক্রমণ
![]() |
গলমাছির আক্রমণ |
লক্ষণঃ
গলমাছি দেখতে অনেকটা মশার মত, পেটটা উজ্জল লাল রংয়ের । স্ত্রী গলমাছি মূল পাতার উপর একটি করে ডিম পাড়ে । ডিম থেকে কীড়া পুত্তলীতে পরিণত হয় । এর আক্রমণে ধানের ডিগপাতা পেঁয়াজ পাতার মতো নলাকার হয়ে যায় ।
ব্যবস্থাপনাঃ
অন্যান্য পোকার মত এ পোকার বিরুদ্ধে এখনও একাধিক দমন ব্যবস্থা উদ্ভাবন হয়নি । কীটনাশক দিয়ে দমন করাই প্রধান ব্যবস্থা । ডায়াজিনন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: রাজধান ১০ জি ১৬.৮০ কেজি/হেক্টর হারে প্রয়োগ করা অথবা ফেনথোয়েট গ্রুপের কীটনাশক যেমন: সিডিয়াল ৫০ এল ৩ মিলি/ লি হারে পানিতে মিশিয়ে বিকালে স্প্রে করা ।
পোকার নামঃ ধানের গান্ধী পোকা
![]() |
গান্ধী পোকার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
এ পোকা পূর্ণ বয়স্ক ও নিস্ফ উভয় অবস্থায় ক্ষতি করে । ধানে দুধ আসা অবস্থায় ক্ষতি বেশি করে । ফলে ধানের গায়ে দাগ ও চিটা হয় ।
ব্যবস্থাপনাঃ
১।২০০-৩০০ মিটার দূরে দূরে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা ।
২। শামুকের মাংসের সংঙ্গে বালাইনাশক মিশিয়ে কাপড়ের পুটলিতে বেঁধে ধানের দুধ আসার সময় বিষ ফাঁদ হিসেবে ক্ষেতের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহার করা ।
৩। আক্রমণ বেশি হলে যে কোন একটি বালাইনাশক ব্যবহার করা যেমন: ম্যালাথিয়ন গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ফাইফানন বা হিলথিয়ন ২ মিলি./লি. হারে বা ক্লোরপাইরিফস গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ডার্সবান ২ মিলি/ লি. হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা ।
সাবধানতাঃ
অতি বিলম্বে বা অতি অগ্রিম ধান চাষ করবেন না
করনীয়ঃ
এলাকার সকল চাষী কাছাকাছি সময়ে ধান চাষ করুন, তাহলে পোকার আক্রমণ কম হবে।
পোকার নামঃ ধানের সবুজ পাতা ফড়িং
![]() |
সবুজ পাতা ফড়িং এর আক্রমণ |
লক্ষণঃ
সবুজ বর্ণের এ পোকার পাখায় কাল দাগ থাকে। এরা টুংরো ও হলুদ বামন রোগ ছড়ায়।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পাতা ফড়িং মেরে ফেলা ।
২। হাত জালে প্রতি একশত টানে ৪০-৫০ টি সবুজ পাতাফড়িং পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক অনু্মোদিত মাত্রায় ব্যবহার করা যেতে পারে । যেমনঃ ফেনথয়েট ৪০০ মিলি/একর অর্থাৎ ১০লিটার পানিতে ২০ মিলি প্রতি ৫ শতক হারে ।
সাবধানতাঃ
১। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না
করনীয়ঃ
১। রোগ সহনশীল জাত যেমন: বিআর২২, বিআর২৩, ব্রি ধান৩১ ও ব্রি ধান৪১ চাষ করা যেতে পারে।
২। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষ করা।
৩। সুষম পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহার করা।
৪. ধানের জাত অনুসারে সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ করা (তবে ২৫x২০ সেন্টিমিটার দূরত্বই ভাল)।
পোকার নামঃ ধানের লম্বা শুড় উড়চুঙ্গা পোকা
![]() |
লম্বা শুড় উড়চুঙ্গার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
এই পোকার কীড়া ও পূর্ণ বয়স্ক উভয় অবস্থায় ক্ষতি করে । এরা কেটে কেটে পাতার কিনারা ও শিরাগুলোর ঝাঁঝড়া হয়ে যায় । আক্রমণ বেশি হলে গাছ দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে ফলনের ক্ষতি হতে পারে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। হাতজাল দিয়ে পোকা ধরে মেরে ফেলা ।
২। ডালপালা পুঁতে পোকা খেকো পাখী বসার ব্যবস্থা করা ।
৩। শতকরা ২৫ ভাগ ধানের পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করা যেমন: কার্বোসালফান ৪০০ মিলি/একর, কুইনালফস ৬০০ মিলি/একর ব্যবহার করা ।
পোকার নামঃ ধানের থ্রিপস
![]() |
থ্রিপস পোকার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
ধানের চারা অবস্থা থেকে কুশি পর্যন্ত সময়ে পূর্ণ বয়স্ক থ্রিপস পোকা ও তাদের বাচ্চার রস চুষে খাওয়ার ফলে পাতা লম্বা লম্বিভাবে মুড়ে যায় । পাতায় খাওয়ার জায়গাটা হলদে থেকে লাল দেখা যায়। যে সমস্ত জমিতে সব সময় দাড়ানো পানি থাকে্ না । সাধারণতঃ সে সব ক্ষেতে থ্রিপস এর আক্রমণ বেশি হয় ।
ব্যবস্থাপনাঃ
ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করে এ পোকার ক্ষতি কিছুটা রোধ করা যায় । জমি শুকনা থাকলে পানি দিয়ে অল্প সময়ের জন্য তলিয়ে্ দিয়ে আবার পানি বের করে ফেলা । আক্রান্ত জমির ২৫ ভাগ ধানের পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন: আইসোপ্রোকার্ব-২৬ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমি হারে ব্যবহার করতে হবে।
সাবধানতাঃ
১। আক্রান্ত ক্ষেত থেকে বীজ সংগ্রহ করবেন না ।
করনীয়ঃ
১। রোগ সহনশীল জাত যেমন: বিআর২২, বিআর২৩, ব্রি ধান৩১ ও ব্রি ধান৪১ চাষ করা যেতে পারে।
২। পরিস্কার পরিচ্ছন্ন চাষ করা।
৩। সুষম পরিমাণে ইউরিয়া, টিএসপি এবং পটাশ সার ব্যবহার করা।
৪। ধানের জাত অনুসারে সঠিক দূরত্বে চারা রোপণ করা (তবে ২৫x২০ সেন্টিমিটার দূরত্বই ভাল)।
আপদের নামঃ ধানের ইঁদুর সমস্যা
![]() |
ধানের ইদুর সমস্য |
লক্ষণঃ
ইদুর ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে থাকে । ধান ও গম ক্ষেতে এরা বেশি ক্ষতি করে থাকে । ধান গাছের কাণ্ড তেরছা করে (৪৫ ডিগ্রি কোণে ) কেটে দেয় । গাছের শীষ বের হলে শীষ বাকিয়ে নিয়ে কচি ও পাকা শীষ গুলো কেটে দেয়।
ব্যবস্থাপনাঃ
ইঁদুরের ক্ষয়ক্ষতির ধরণ ব্যাপকতা ও দমন প্রক্রিয়া অন্যান্য বালাই থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ও কৌশলগত । তাই স্থান কাল পাত্র ভেদে কৌশলের সঠিক ও সমন্বিত দমন পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে ইঁদুর নিধন করা যায় । এতে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি, ইঁদুর বাহিত রোগ ও পরিবেশ দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব হয় । তবে ইদুরকে সঠিক ভাবে মোকাবেলা করার জন্য সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আশা একান্ত প্রয়োজন ।
(ক) অ-রাসায়নিক দমনঃ
০১। ইঁদুরের গর্ত খুড়ে ইঁদুর পিটিয়ে মেরে ফেলা ।
০২। ইঁদুরের গর্তে পানি ঢেলে ইঁদুর বের করে মেরে ফেলা ।
০৩। ইঁদুরের গর্তে মরিচ পোড়া গন্ধ দিয়ে ইঁদুর মারার ব্যবস্থা করা ।
০৪। নিবিড় ফাঁদ পাতা: বিভিন্ন ধরনের ফাদ পেতে ইঁদুর নিধন করা ।
০৫। আঠা ব্যবহার করে: ইঁদুর ধরার জন্যে গুদামে বা ঘরে এক প্রকার আঠা সাধারণত: কাঠেরবোর্ডে, মোটা শক্ত কাগজে, টিনে, লাগিয়ে ইঁদুর চলাচলের রাস্তায় ব্যবহার করলে ভাল ফল পাওয়া যায়। বোর্ডের মাঝখানে লোভনীয় খাবার রাখতে হবে ।
(খ) রাসায়নিক দমনঃ
এ ধরন বিষটোপ ইঁদুর একবার খেলেই কয়েক ঘন্টা মধ্যে মারা যায় । যেমনঃ গমে মিশ্রিত জিংক ফসফাইড (২%) বিষটোপ । প্রয়োগ কৌশলঃ জিংক ফসফাইড অমিশ্রিত গম কয়েকদিন দিয়ে অভ্যাস করে হঠাৎ একদিন <২% জিংক ফসফাইড মিশ্রিত গম প্রদান করা । সমস্যাঃ বিষটোপ লাজুকতা দেখা দিতে পারে যদি ইঁদুরগুলো সরিয়ে ফেলা না হয় । বিষটোপ খেয়ে ইঁদুর মরে পরে আছে, এটা দেখে জীবিত ইদুরের ঐ বিষটোপ খাওয়ার অনিহাই হলো বিষটোপ লাজুকতা ।
ইঁদুর দমনের উপযুক্ত সময়ঃ
০১। যে কোন ফসলের থোড় আসার পূর্বে । এ সময় মাঠে ইঁদুরের সংখ্যা এবং এদের খাবার কম থাকে বিধায় ইঁদুর বিষটোপ সহজে খেয়ে থাকে ।
০২. ঘর বাড়িতে সারা বছর ব্যাপি ও বর্ষার সময় ।
০৩. বর্ষার সময় রাস্তাঘাট ও বাধে (যখন মাঠে পানি থাকে)। ০৪. গভীর ও অগভীর সেচের নালায় প্রথম পানি ছাড়ার দিন । জৈবিক দমন পদ্ধতিঃ জীব দিয়ে ইঁদুর দমনের কৌশল এ পদ্ধতির অর্ন্তভূক্ত । বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক শত্রু যেমন: শিয়াল, বেজি, বন বিড়াল, সাপ, গুইসাপ, পেচা এসব দিয়ে ইঁদুর মারা যায় । কাজেই ইঁদুর ভোজী প্রাণীদের বংশ বিস্তারের যথাযথ ব্যবস্থা করতে হবে ।
সাবধানতাঃ
১। ক্ষেতের আশপাশ অপরিচ্ছন্ন রাখবেন না।
২। একই দমন ব্যবস্থা বারবার ব্যবহার করবেন না
করনীয়ঃ
১। ধান ক্ষে্তে থোড় আসার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
২। সবাই মিলে একত্রে সমন্বিত ভাবে ইঁদুর দমন করুন।
৩। মাঠে সবাই মিলে একসাথে ফসল চাষ করে একসাথে কেটে আনুন। তাহলে খাবার না পেয়ে অনাহারে থাকলে, ইঁদুরের জন্মহার কমে যাবে ।
পোকার নামঃ ধানের শীষ কাটা লেদা পোকা
![]() |
শীষ কাটা লেদা পোকার আক্রমণ |
লক্ষণঃ
এ পোকা ধানের শীষ কেটে ক্ষতি সাধন করে।
ব্যবস্থাপনাঃ
১। সম্ভব হলে আক্রান্ত ক্ষেত সেচ দিন।
২। সম্ভব হলে আধা পাকা ধান বাঁশ দিয়ে হেলিয়ে দিন।
৩। ধান পেকে গেলে দ্রুত কেটে ফেলুন।
৪। প্রতি বর্গমিটার স্থানে যদি গড়ে ১টি কীড়ার উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে কার্বারিল গ্রুপের কীটনাশক যেমন: ভিটাব্রিল ২৭ গ্রাম প্রতি ১০ লিটার পানিতে মিশিয়ে ৫ শতক জমির জন্য এই হারে প্রয়োগ করতে হবে ।
সাবধানতাঃ
১। ৮০% ধান পাকার পর আর জমিতে ফেলে রাখবেন না।
করনীয়ঃ
১। ফসল কাটার পর আক্রান্ত জমি ও তার আসে-পাশের জমির নাড়া পুড়িয়ে দিন।
২। পাখির বসার জন্য ডালপালা পুঁতে দিয়ে ও এদের সংখ্যা কমানো ।
আপদের নামঃ কৃসেক
লক্ষণঃ
চারা গোড়া পচা ওদুর্গন্ধ
ব্যবস্থাপনাঃ
ডায়থেন এম 45/রিডোমিল গোন্ড
করনীয়ঃ
জমির অতিরিক্ত পানি অপসারণ করতে হবে।