পানি কচুর আক্রমণকারী ক্ষতিকর পোকার লক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, সাবধানতা ও করণীয় প্রতিকার ব্যবস্থা
কচু Araceae গোত্রভুক্ত একধরনের কন্দ জাতীয় উদ্ভিদ।রাস্তার পাশে, বাড়ির আনাচে কানাচে, বিভিন্ন পতিত জমিতে অনাদরে-অবহেলায় অনেক সময় কচু জন্মাতে দেখা যায়। নাইজেরিয়া বিশ্বের বৃহত্তম কচু উৎপাদনকারী দেশ। এই দেশটি প্রতি বছর প্রায় ৩৩ লক্ষ মেট্রিক টন কচু উৎপাদন করে। বিশ্বব্যাপী কচুর গড় ফলন হেক্টর প্রতি ৬.২ টন তবে এর ফলন অঞ্চল অনুসারে পরিবর্তিত হয়। এশিয়ায় এর গড় ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ১২.৬ টন। যে সমস্ত কচু দাড়াঁনো পানিতে চাষ করা যায় তাকে পানি কচু বলে। জলে হয় বলে সম্ভবতই এর নাম পানি কচু বা জল কচু। সারাদেশে পানি কচু বা জল কচুর বিভিন্ন নাম রয়েছে যেমন নারিকেল কচু, জাত কচু, বাঁশকচু ইত্যাদি। সবজি হিসেবে পানি কচুর গুরুত্ব ব্যাপকভাবে সমাদৃত। বিশেষ করে চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের কাছে এটি একটি জনপ্রিয় সবজি। কারণ এর স্বাদ এবং পুষ্টিমান ও অত্যধিক, রান্না করাও সহজ।
পোকার নামঃ পানিকচু/লতি কচুর লেদা পোকা
লক্ষণঃ
ছোট ও কালচে রং এর পোকাগুলি পাতা খেয়ে ব্যাপক ক্ষতি করে।
ব্যবস্থাপনাঃ
প্রথম অবস্থায় লেদা পোকাগুলো পাতাসহ তুলে নষ্ট করা। প্রতি লিটার পানিতে মেটাসিস্টক্স ২ মিঃলিঃ অথবা সেভিন ১.৫ গ্রাম ব্যবহার করা। (আঠা বা সাবানের গুড়া সহ) কচুর পাতা অত্যন্ত পিচ্ছিল, এজন্য স্প্রে করার সময় পানিতে বালাই নাশকের সাথে ২-৩ গ্রাম গুড়া সাবান মিশিয়ে দিতে হবে।
![]() |
কচুর লেদা পোকার আক্রমণ |
সাবধানতাঃ
১. আক্রান্ত ক্ষেত থেকে চারা বা কন্দ পরের বার রোপনের জন্য ব্যবহার করবেন না।
২. একই ক্ষেতে বার বার কচু চাষ করবেন না।
করনীয়ঃ
পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ নিশ্চিত করুন।
আরও
পোকার নামঃ পানিকচু/লতি কচুর পাতামোড়ানো পোকা
এ পোকা কচুর পাতা মুড়িয়ে ভেতর থেকে খেয়ে ক্ষতি। এটি কচুর ক্ষেত্রে মারাত্বক কোন পোকা নয়।
ব্যবস্থাপনাঃ
প্রথম অবস্থায় পোকাগুলো পাতাসহ তুলে নষ্ট করা। সাধারণত রাসায়নিক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজন হয়না। তবে ব্যাপক আক্রমণ হলে, প্রতি লিটার পানিতে মেটাসিস্টাক্স-২ মিঃলিঃ, সেুভন-১.৫ গ্রাম ব্যবহার করা । (আঠা বা সাবানের গুড়া সহ) কচুর পাতা অত্যন্ত পিচ্ছিল, এজন্য স্প্রে করার সময় পানিতে ছত্রাক নাশকের সাথে ২-৩ গ্রাম গুড়া সাবান মিশিয়ে দিতে হবে।
![]() |
কচুর পাতা মোড়ানো পোকার নমুনা |
সাবধানতাঃ
এক ক্ষেতে বার বার কচু চাষ করবেন না।
করনীয়ঃ
পরিচ্ছন্ন চাষাবাদ নিশ্চিত করুন।
আরও
পোকার নামঃ কচুর জাব পোকা
![]() |
কচুর জাব পোকার নমুনা |
লক্ষণঃ
পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে।
ব্যবস্থাপনাঃ
*গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা।
*প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা *পরিস্কার পানি জোরে স্প্রে করা।
*ক্ষেত পরিচ্ছন্ন রাখা।
*হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা।
*তামাকের গুড়া (১০গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা।
*প্রতি গাছে ৫০ টির বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি.লি. হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা। এ ক্ষেত্রে স্টিকার হিসাবে সাবানের গুড়া বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
![]() |
কচুর জাব পোকার লক্ষণ |
সাবধানতাঃ
স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না।
করনীয়ঃ
১. আগাম জাতের কচু চাষ করা।
২. সুষম সার ব্যবহার করা।
আরও
পোকার নামঃ কচুর ঘাস ফড়িং
![]() |
কচুর ঘাসফড়িং এর লক্ষণ |
লক্ষণঃ
পোকা গাছের কচি পাতা খেয়ে ঝাঝরা করে ফেলে।
ব্যবস্থাপনাঃ
*প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা।
*পরিস্কার পানি জোরে স্প্রে করা।
*ক্ষেত পরিস্কার/পরিচ্ছন্ন রাখা ।
*বেশি পোকা দেখা দিলে এডমেয়ার ২০ এসএল ০.৫ মিলি.লি. হারে পানিতে শিশিয়ে স্প্রে করা। এ ক্ষেত্রে স্টিকার হিসাবে সাবানের গুড়া বা শ্যাম্পু ব্যবহার করা যেতে পারে।
সাবধানতাঃ
স্প্রে করার পর ১৫ দিনের মধ্যে সেই সবজি খাবেন না বা বিক্রি করবেন না।
করনীয়ঃ
১. আগাম জাতের কচু চাষ করা।
২. সুষম সার ব্যবহার করা।
----
আরও তথ্য দেখতে ভিজিট করুন: www.krishokseba.com